মরণোত্তর সম্মাননায় মাহেরীন চৌধুরী

মাহেরীন চৌধুরী
শিক্ষক
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ
(৬ জুন ১৯৭৯—২১ জুলাই ২০২৫)

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরী ছিলেন এমন এক আলোকবর্তিকা, যিনি শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে জ্বালিয়ে গেছেন ভালোবাসা আর জ্ঞানের দীপ্তি। শ্রেণিকক্ষে তাঁর প্রতিটি উপস্থিতি ছিল শিক্ষার্থীদের জন্য আশার আলো, পথচলার প্রেরণা। আন্তরিকতা ও মানসম্পন্ন শিক্ষাদানের মাধ্যমে তিনি শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সহকর্মী সবার হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছেন।

২০০৭ সালের ১১ জুন মাহেরীন চৌধুরী মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যোগ দেন। পরে দীর্ঘদিন তিনি সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর শিক্ষাদানপদ্ধতি ছিল আধুনিক ও প্রাণবন্ত। পাশাপাশি মানবিক গুণাবলি ও ব্যক্তিত্বের জন্যও তিনি সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের কাছে ছিলেন অনন্য।

মাহেরীন চৌধুরীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা একটি স্নেহময় পরিবারে। তাঁর বাবা ছিলেন মৃত মোহিতুর রহমান চৌধুরী এবং মা ছিলেন মৃত সাবেরা চৌধুরী। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। তাঁর দুই ভাই—মারুফ মুজিব চৌধুরী ও মুনাফ মুজিব চৌধুরী এবং একমাত্র বোন মেহেতাজ চৌধুরী। তাঁর স্বামী মো. মনসুর হেলাল। তাঁদের দুই সন্তান—প্রথম সন্তান আয়ান রশিদ মিয়াদ এবং দ্বিতীয় সন্তান আদিল রশিদ মাহিব।

মাহেরীন চৌধুরী এসএসসি (১৯৯৫) বিএএফ শাহীন কলেজ, কুর্মিটোলা থেকে এবং এইচএসসি (১৯৯৭) বিএএফ শাহীন কলেজ, তেজগাঁও থেকে সম্পন্ন করার পর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ (১৯৯৯) এবং মানারাত ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ (২০০৬) সম্পন্ন করেন।

মাহেরীন চৌধুরীর শিকড় নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার বুগলাগাড়ি গ্রামে। তবে কর্মসূত্রে তিনি সপরিবার উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরে বাস করতেন।

২০২৫ সালে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিমান দুর্ঘটনায় এই নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকের অকালপ্রয়াণ শিক্ষাঙ্গন ও শিক্ষার্থীদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর শিক্ষা, অবদান ও মমত্ববোধের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁকে ‘আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২৫’-এ মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে।
আমরা তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও অকৃত্রিম ভালোবাসা জানাই।

Scroll to Top